বাংলাদেশ এর ঋতু বৈচিত্র রচনা
বাংলার ঋতু বৈচিত্রা
ভূমিকা: এক অসাধারণ সৌন্দর্যসটের নাম বাংলা। প্রকৃতির মায়া মমতা যার আপন বৈশিষ্ট্য। যে দেশকে বিধাতা সাজিয়েছেন তাঁর আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে, সুচারুরূপে, বর্ণাঢ্য করে। সে দেশের নাম বাংলাদেশ বা আমাদের বঙ্গভূমি যে দেশের সৌন্দর্যের মাঝে নেই কোন কৃত্রিমতার ছোঁয়া, আছে কেবল প্রগাঢ় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ, সে দেশের নাম বাংলাদেশ। নিসর্গ যে দেশের সমাহার প্রকৃতি শে দেশের রুপ সুন্দর । উপকরণ সে দেশেইতো বাংলা। অপূর্ব সৌন্দর্যে শস্য সম্পদে আর প্রকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরা এমন দেশ পৃথিবীতে আর একটিও নেই৷ এদেশে জন্মেছি আমি। আমি ধন্য। আমি তৃপ্ত। এ-বাংলার রূপে বিমুগ্ধ কবি আবেগে উদ্বেলিত হয়েতাই গেয়ে ওঠেন । ধন ধান্যে পুষ্পেভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা,
বাংলার সীমা ও ভূ-প্রকৃতি আমাদের একদিকে রয়েছে বিস্তৃত হিমালয় পর্বত। যেন প্রহরীর ন্যায় দণ্ডায়মান যাকে কেন্দ্রকরেই আবর্তিত হয়েছে । ষড়ঋতু। আবার দক্ষিনে রয়েছে সুবিস্তৃত মহাসাগর নীলাচল মেলে রেখেছে সমগ্র মানুষের জন্য।
যেন এক নরমকোমল হৃদয়ের ছোঁয়া এরই মাঝেবিস্তৃত হয়েছে বাংলার রূপ প্রকৃতির সৌন্দর্য আবর্তিত হয়েছে ঋতুচক্র।
বাংলার সৌন্দর্য: বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছিতই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে চাই না আর। গ্রাম বাংলার রূপে বিমুগ্ধ রূপসী বাংলার কবিতীবনানন্দ দাশের এ স্বীকারােক্তিতেই প্রতীয়মান হয় বংলার গ্রামীণসৌন্দর্য। গ্রামকে বাদ দিয়ে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোন চিহ্নসূত্রই থাকবে না। গ্রাম প্রধান দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। তই বাংলার যে দিকে দৃষ্টিপাত করি না কেন চোখে পড়ে শ্যামল শোভাশযসবুজ অরণ্যানী। কোথাও বা মাঠের পর মাঠ আরসােনালি পাকা ধানের শোভা দৃশ্যমান। সেই ধানের ক্ষেতে যখন মৃদুমন্দ হাওয়া বয়ে যায়, তখন বযৌবনা কুমারীর মতই কলহাস্যে নেচে দুলে ওঠে সেইস্বর্ণ রূপিনী ধানের ক্ষেত কোথাও আবার সারি সারি তাল-বিকেলখেজুবের বনানী, কোথাও বা সুস্থ বটবৃক্ষ মৌনতপস্যায় মাথা উঁচু করে উৰ্ব্বসানে
ঋতুবৈচিত্র্যঃ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আবর্তিত হয় এর ঋতুবৈচিত্র্যের সাথে সাথে দুটি ঋতুর এক আশ্চর্যলীলানিকেতন এই বাংলাদেশ। প্রতিটি ঋতুই বৈচিত্র্যে আর সৌন্দর্যে অনন্য।
গ্রীষ্ম: এখানে গ্রীষ্ম আসে সূর্যের প্রচন্ডদাবদাহ নিয়ে। গাছে গাছে পেকে ওঠে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল প্রভৃতি ফল। মাঠ-ঘাঠ-প্রান্তর, জনজীবন সবকিছুই এ সময় মেতে ওঠে। প্রখর তাপ দাহে জীবধাত্রী ধরিত্রীর বক্ষ বিধীর্ণ হয়ে যায়, চৌচির হয়ে যায় তার তৃষ্ণার্ত প্রান্তর। তাইতাে কবি বলেছেন,
ঘাম ঝরে দর দর গ্রীষ্মের দুপুরে
মাঠ ঘাট চৌচির, জল নেই পুকুরে।
বর্ষা: গ্ৰীয় বিদায়নে বর্ষার আগমনের সাথে সাথে আষাঢ়ের জলধারা বাংলার প্রকৃতিকে দেয় চির সবুজ করে। খাল,বিল নদী ,নালা পানিতে থৈ থৈ করে তখন। কদম্ব, যুথী, কেয়া৷ কবি গেয়ে ওঠেন
নিল নবগনে আষাঢ় গগনে
তিল তাই আর নাহিরে
শরৎত: বর্ষার পরেই শরতের আগমন শুরু হয় । বর্ষার নিপীড়িতাধরণী আবার পুলকিত হয়ে ওঠে। শশীর উজ্জল কিরণেকি কাশবন । কি বনের বৃক্ষশীর্ষ ।কি গৃহচূড়া কি নদীর নির্জন বৃক্ষ সমস্তই হাস্যময়ীরূপ ধারণ করে। শরৎকালে শেফালী কামিনী প্রভৃতি ফুল প্রস্ফুটিত হলে সৌন্দর্য সৌরভে সবাইকে মুগ্ধ করে। এ সময় কবি গেযে উঠেন ।
এৰাব অবগুণ্ঠনখোল গহন মেঘ মায বিন বন ছায়ায় তামার আঁচলে
অবগুণ্ঠন সারা হল শিউলি সরভি রাত বিকশিত লোচনাতে
মুদুমর্মর গানে তব মর্মর বাণীবালা।
হেমন্তে:বাংলার মানুষের জীবনে নব আশার সঞ্চার করে প্রকৃতিতে এবার আগমন ঘটে পাকা ধানের গন্ধে মাতাল করাহেমন্তে। শস্যক্ষেত্র ধারণ করে এসময় হরিদ্রাবর্ণ, রাত্রিতে শিশির পড়ে ভিজিয়ে দেয় সতেজ ঘাসের ডগা। ভােরে সেই ভেজা ঘাসের ওপর ঝরে পড়ে শিউলি ফুল।।
শীতে: গাছপালাকে শ্রীহীন করে, বিবর্ণ করে দিয়ে, এরপর প্রকৃতিতে ফেঁকে বসেশীত বুড়ি। অবশ্য শীতে বাংলার প্রকৃতি পায় এক ব্যতিক্রমী সৌন্দর্য। চারদিকে সাদা কুয়াশার চাদর, ভোরে খেজুর রস পাড়ার দৃশ্য, নাড়ার আগুনেশিমপোড়ানো এ সবের মধ্যেই আছে এক স্বতন্ত্র আনন্দ
ঋতুরাজ বসন্তে: সবশেষে প্রকৃতিরাজ্যে আগমন ঘটে ঋতুরাজ বসন্তের। গাছ-পালা নব দলবে সুশোভিত হয়ে ওঠে ।
ফুলে ফুলে মধুমক্ষিকার গুন গুনতান, গাছে গাছে কোকিলের গান সোনা যায়। হৃদয় ছুঁড়ে বেরোয় গান
আত্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে,
বসন্তের এই মাতাল সমীক আছে ।
উপসংহারঃ বাংলার প্রকৃতি এতই সুন্দর দেখে প্রান জুরে যায় ।কেউ এই দেশে আর ফিরে জতে চায় না । বাংলার প্রকৃতির সুন্দরজের কথা বলে শেষ করা যাবে না ।
অন্যান্য বিষয়ে মজার মজার টেকনিক শিখতে আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ সবাইকে।