একুশে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
সারা বিশ্বের বাংলা ভাষা-ভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে একুশে ফেব্রুয়ারি একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীদের কাছে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পরিচিত। প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে দিনটি ভাষা দিবস ও ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৫২সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যখন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন তখন ছাত্ররা এ ঘোষণার প্রতিবাদ জানায়। তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ শুরু। পুলিশের গুলিতে রফিক শফিক জব্বার বরকত সালাম সহ নাম-না-জানা অনেক তরুণ ছাত্র শহীদ হন। এই দিনে ভাষার জন্য অনেকে শহীদ হয়েছেন বলেই এই দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
জাতিসংঘ ৫ আগস্ট ২০১০ সালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। যার ফলে প্রতিবছর এই দিনটি সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
তৎকালীন বঙ্গীয় সমাজে বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে বাঙালিদের কাছে যে ভাষা চেতনার উন্মেষ ঘটে তাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭সালে ভাষা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৪৮ সালে এ নিয়ে সীমিত পর্যালোচনা চললেও ১৯৫২সালে একুশে ফেব্রুয়ারীতে তার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষণ
একুশে ফেব্রুয়ারি ফেসবুক স্ট্যাটাস
ঐদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা 144 ধারা প্রত্যাহার করে রাজপথে নেমে আসলে পুলিশ তাদের উপর লাঠি চালায় এবং গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে অনেক ছাত্র আহত হন এবং ঘটনাস্থলে কয়েকজন নিহত হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২২ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণ ও রাস্তায় নেমে পড়ে। ভাষার দাবিতে শুরু হয় তীব্র আন্দোলন যার ফলে তৎকালীন সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হন।
১৯৫২ সালে বাঙালিরা তাদের রক্ত দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করেছিল। যা আজ বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাতৃভাষার স্বীকৃতি লাভ করেছে। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি রাত 12 টা 1 মিনিটে রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সকল স্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটির করুণ সুর দিয়ে এই দিনটি পালিত হয়। ভাষা শহীদদের বাঙালি আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে এবং একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি প্রতিটি বাঙালির হৃদয় চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।