কবিতা

পহেলা বৈশাখের কবিতা ২০২২, সেরা নববর্ষের কবিতা

আসসালামু আলাইকুম আপনাদের সবাইকে শুভ নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা এবং প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি আমাদের আজকের পোস্ট। আজকের পোস্টটি হচ্ছে পহেলা বৈশাখের কবিতা। বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদের মাঝে পহেলা বৈশাখের বিখ্যাত কিছু কবিতা ও বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রচিত কিছু কবিতা তুলে ধরবো। আশা করি আমার প্রকাশিত কবিতা গুলো আপনাদের সবার ভালো লাগবে। আমার প্রকাশিত কবিতা গুলো সংগ্রহ করে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধব ও প্রিয় জনদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারবেন।

পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে সব থেকে শ্রেষ্টতম একটি দিন। এটি বাংলা বছরের প্রথম দিন। পহেলা বৈশাখ এর মাধ্যমে বাংলা বছরকে বরণ করা হয়। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দিন টিতে বিভিন্ন রকম মেলা ও উৎসবের মাধ্যমে কাটানো হয়। বাঙালি জাতির সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন অতি পুরাতন অর্থাৎ হাজার বছরের ইতিহাস আমাদের পহেলা বৈশাখ। এই দিনটি উপলক্ষে প্রতি টি বাঙালির ঘরে ঘরে পান্তা ইলিশ খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে বাঙালিরা পুরনো বছর কে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বরন করে। শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছায় মুখরিত হয় সারা বাংলা। বাঙালিরা একে অপরকে শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায় এবং মিষ্টি মুখ করে থাকে। শুধু বাংলাদেশ নয় আন্তর্জাতিক ভাবে ও এই দিনটি পালন করা হয়।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে বিখ্যাত কবিতা

বন্ধুরা এখানে আমরা আপনাদের মাঝে পহেলা বৈশাখ নিয়ে বিখ্যাত কিছু কবিতা তুলে ধরবো। কবিতা প্রিয় বাঙালিরা কবিতা বড়ই ভালোবাসে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাঙালিরা বিভিন্ন রকম মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। মেলায় তাঁরা বিভিন্ন ধরনের গান নাচ ও কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করে থাকে। মেলা উপলক্ষে বাঙালিরা একে অপরকে কবিতার উপহারের মাধ্যমে ও শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকে। করোনা নামক একটি মহামারীর কারনে বিগত কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক অঙ্গনে দিনটি উদযাপন করতে পারছে না কিন্তু তাই বলে তারা দমে নেই। পহেলা বৈশাখের আনন্দ কে ধরে রাখছে তারা অনলাইন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে। সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন রকম ভাবে এই দিনটি শুভেচ্ছা ও কবিতা শেয়ারের মাধ্যমে দিন টি উদযাপন করা হয়। এজন্য আমি আপনাদের মাঝে পহেলা বৈশাখের বিখ্যাত কিছু কবিতা তুলে ধরবো। যেগুলো সংগ্রহ করলে আপনারা নতুন বছরের দিন টি জাঁকজমক ভাবে পালন করতে পারবেন। নিচে আমার প্রকাশিত কবিতা গুলো তুলে ধরা হলো:

বর্ষবরণ

বৈশাখ মানে বাঙালীয়ানা, অন্য রকম সাজ
ছুটোছুটি, হুড়োহুড়ি সবার অনেক কাজ।
গ্রামবাংলার চৈতালি কিংবা পাহাড়ের বৈসবি
মহাজনের হালখাতাটাও বর্ষবরন উৎসবই।

কাচা-লঙ্কা, বেগুনভাজা, পান্তা-ইলিশ হবে
শেষ পাতেতে মণ্ডা-মিঠাই পেট পুরে সব খাবে।
রাতজেগে সব আল্পনা দেয়, ভোরের শোভা যাত্রা
পিঠাপুলি নাগরদোলা এসব নিয়েই মেলা।

ধুতি আর পাঞ্জাবিতে ছেলের দল সাজে
গানের আসরে ঢোল তবলা হারমনিয়াম বাজে,
লাল-সাদায় বঙ্গ নারীর কি অপরূপ বেশ
ঢাক-ঢোলের জামা গায়ে বাচ্চাদের হাসির রেশ।

এসেছে বৈশাখ

দামাল হওয়া জানান দেয় বৈশাখ যে দ্বারে
পেছন ফিরে চেয়ে দেখি বসন্ত যায় চলে
আমের শাখে গুটি দেখি, কাঠাল বাগে ইঁচড়;
দামাল হাওয়ার জানান দেয় পাপিয়া, চাতক খেচর।

চৈত্র্যের সেই কাঠফাটা রোদ, চৌ-চির মাঠ-ঘাট
চৈতালী শেষে বৈশাখেতেও বসে মেলা-হাট।
হিমচাপা আর কৃষ্ণচূড়ায় নন্দিত দৃষ্টি,
জারুল পানে শ্রান্তি আসে, প্রতিক্ষাতে বৃষ্টি।

বৃক্ষতলে শ্রান্তি মেলে রাখাল বাজায় বাশি-
বাউলেরা গান ধরে যে, তপ্ত রোদেও হাসি।
নদীর বুকের জল যে কমে- শুষ্ক হাওড়-বাওড়
কখন যেন ঝড় উঠে তাই যায়না করা ঠাওর।

নবরূপে নবসাজে নতুন বছর আসে
চোখের তারায় জমা হয়ে পুরোনো স্মৃতি ভাসে।
প্রাক্তন কে ফিকে করে নব দিনে পা
বৈশাখ যে এসে গেছে বরন করে যা।

 

পহেলা বৈশাখের কবিতা 

বৈশাখ এলো কাল বৈশাখীর

হাওয়ায়-হাওয়ায় ধেয়ে,,

বৈশাখ এলো বাউলের বেশে

বৈশাখী গান গেয়ে !!””

উচ্ছ্বাসের এই দিনে নবীন

ছড়াও প্রেমের বার্তা ,,

তোমরা জাতির ধরবে হাল

আর হবে দেশের কর্তা !!””

বৈশাখ এলো ক্ষিপ্ত বেগে

সিঁদুর মেঘের গায়,,

বৈশাখ এলো উগ্রতা নিয়ে

কৃসনো মেঘের নায় !!””

শোষণ যুলুম রুখে দাড়াও

তাড়াও দুখের দিন ,,

সব বেদনা ভুলে বাজাও

হেথায় সুখের বীণ !!””

পুরোনো সব দুঃখ ভুলে

ফিরে এলো প্রহেলা বৈশাখ,,

সব ভেদাবেদ ভুলে বাজাও

ন্যায় শাসনের হর্ষ !!””

এদেশ আমার জন্মভূমি

এদেশ আমার প্রাণ ,,

কাঁদলে কেউ দুখে

পড়ে হৃদয় সুতোয় টান !!””

পহেলা বৈশাখ নিয়ে রচিত রবী ঠাকুরের কবিতা

বাংলা বছরের প্রথম দিন টি নিয়ে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিছু কবিতা ও গান রচনা করেছেন। তিনি কবিতা ও গানের মাধ্যমে পুরনো বছর কে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে সাদরে গ্রহণ করে করেছেন। নববর্ষের শুভেচ্ছায় মুখরিত সারা বাংলার আনন্দ কে ধরে রাখার জন্য তিনি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বেশ কিছু কবিতা সমগ্র প্রকাশ করেছেন। পহেলা বৈশাখে অর্থাৎ নববর্ষে তার বিখ্যাত কবিতা ও গান গাওয়ার মাধ্যমে দিন টি উদযাপন করা হয়। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি এ রকমই কিছু কবিতা ও গান। যেগুলো পহেলা বৈশাখের দিন টি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।তো বন্ধুরা আর দেরি না করে চলুন বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কবিতা গুলো দেখে নেওয়া যাক। নিচে কবিতা গুলো তুলে ধরা হলো:

এসো হে বৈশাখ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এসো এসো এসো হে বৈশাখ

তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষের দাও উড়ায়ে,,

বৎসরের আবর্জনা দুর হয়ে যাক

যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,

অশ্রু বাষ্প সুদূরে মিলাক !!””

মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা

অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা

রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,,

আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ

মায়ার কুজ্মটিজাল যাক দূরে যাক !!”

বাঙালির ইতিহাসে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ দিনটি হলো পহেলা বৈশাখ। এই দিনটি উদযাপন বাঙালি জাতির জীবনে সবথেকে বড় আনন্দের। তাই আমাদের সবাইকে পহেলা বৈশাখ জাঁকজমক ভাবে উদযাপন করার মাধ্যমে দিন টি পালন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button